অফিস থেকে বের হয়েই টিপটিপ বৃষ্টির মুখোমুখি হলাম। মা রোজ বলে ছাতা নিয়ে যেতে। তবে আমার কাছে কেমন জানো বোঝা বোঝা লাগে। যাই হোক ভাড়া ঠিক করে রিকশায় উঠে বসলাম। রিকশাচালক নেহাত ভদ্র লোক ভাড়া নিয়ে তেমন দরকষাকষি করতে হলো না।
রিকশাআলা ভালো মতো ঢেকে নিলো রিকশা কিছু পথ যেতেই শ্রাবণ ঝরতে লাগলো।
রিকশা থামিয়ে রিকশাচালক সাইডে রাখলো। ভালো ভাবে খেয়াল করে দেখি স্টেশনের কাছাকাছি আছি। বললাম আর যেতে হবে না। ভাড়া দিয়ে এক দৌড়ে চলে গেলাম জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন। ঢুকতেই সতেরো আঠারো বছর বয়সি এক কিশোরের সাথে ধাক্কা খেলাম। বললাম, সরি।
সে আমাকে এবার ধাক্কা মেরে বসলো। বললো তোর সরিতে লাত্থি মারি। বয়সে কম একজন ছেলে এভাবে ব্যবহার করলে কারো মাথাই ঠিক থাকেনা। থাপ্পড় বসিয়ে দিলাম। ওর সাথের আরো দু তিনজন এগিয়ে এলো, অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করলো। আমিও থামবার পাত্র নই প্রতিবাদ করলাম। তবে রেলওয়ে পুলিশ এসে ঘটনাটা সেখানেই ইতি টেনে দিলো।
আমি প্লাটফরম এর দোকান থেকে একটা সিগারেট জ্বালালাম। টানতে টানতে রাগ কিছুটা কন্ট্রোলে আনার চেষ্টা করলাম কিন্তু বিষয় টা মাথার থেকে যাচ্ছে না। আশেপাশে এতো লোক ছিলো কেউ প্রতিবাদ করলো না। এই দেশের এই বিষয় গুলো আসলে মেনে নেওয়া খুবি কষ্টের।
বৃষ্টি থেমে গেছে। রেলওয়ের পশ্চিমের গেট দিয়ে বেরিয়ে পরলাম। সুরমা হোটেলের সামনে আসতেই দেখি এই ছেলে গুলো সাথে আর তিন চার জন আমাকে ফলো করছে। যা বুঝলাম নিরিবিলি জায়গা খুঁজছে আমাকে উত্তম মাধ্যম দেওয়ার জন্য। ব্যাপার টা সিনামা হলে আমি ওদের নায়কের মতো একাই প্রতিহত করতে পারতাম কিন্তু বাস্তব তো আর সিনেমা নয় মাথা খাটিয়ে কিছু একটা করতে হবে।
একটা দোকানে গেলাম একটা সিগারেট নিয়ে ধরালাম। দোকানদারের সাথে কিছু আজাইরা টাইপের গল্প করে শার্টের কলার টা উঁচু করে হাটা শুরু করলাম মুন্সিপাড়া রোড দিয়ে। হয়তোবা যেটা বোঝাতে চেয়েছি কাজে দিয়েছে। ও ভেবেই নিয়েছে এটা আমার এলাকা এদিকে এলে ওদের খবর আছে। জোরে পা চালাতে লাগলাম। আবারো ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে। মুন্সিপাড়া মসজিদের কাছ ঘেসে যেই রোড এসেছে সেটার কাছাকাছি গিয়ে মনে হলো কারা জানো দৌড়ে আসছে। আমিও দৌড় দিলাম এক দৌড়ে মেইন রোড। লাফিয়ে একটা চলন্ত অটোতে উঠে পরলাম। অটোচালক স্লো করতেই ওরা বললো ঐ অটো ওয়ালা অটো থামা। আমি বললাম মামা টান দাও। অটো টান দিলো। ওরা ঢিল জাতীয় কিছু ছুড়ে মারলো। কিন্তু লাগলো না।
অটোতে থাকা এক মাত্র যাত্রী বলে উঠলো মামা এটা কোনো কাজ করলা। কি দরকার ছিলো এভাবে রিক্স নেওয়া। অটো আলা বললো আপা মানুষ মানুষের জন্যেই। ওগোরে চিনি, বিখাউজ পোলাপাইন ভাইজানরে ধরলে আস্তো রাখতো না। ওরা মানুষের জাত না। মেয়েটা থেমে গেলো। আমি কিছুদুর যেয়ে সব ঘটনা খুলে বললাম।
অটো আলা বললো জাত বাচা বাচছেন ভাই। এই সব বখাটে পোলাপাইন। আর যেই বয়সে ওরা আছে রক্তগরম আবার নেশাখোর। আর ওগো আসল পাওয়ার কিন্তু বিআইডি বাজারে, ঝামেলা করতেই পারে।
আমাকে কিভাবে চিনবে এমন কিছু আমার মাথায় এলো না। বললাম
-হুদাই ঝামেলায় পইরা গেলাম রে মামা আর তোমারে ধন্যবাদ। এখন কি করা যায় এক কাজ করো আমারে ডুয়েটে নামায়া দিও।
- ভাই জান এই আপা যাইবো শিমুলতলী আপনের বাসা কোনদিক?
- ঐদিকেই
- আপা যদি রাজি থাকে তবে আমি মাঝিরখোলা দিয়া ঘুরাইয়া নিয়া যাইতে পারি।
মেয়েটার রাজি হওয়ার কথা না। একা একটা মেয়ে অপরিচিত দুজনের সাথে রিক্স নিয়ে কেনো এমন একটা নিরিবিলি রোডে যাবে কিন্তু মেয়েটা রাজি হয়ে গেলো।
বলল চলেন মানুষের বিপদেই মানুষ।
মাঝির খোলা রোডে ঢুকলাম। ভাঙ্গাচুরা রাস্তা। রোড লাইট জ্বলছে না মনে হয় ইলেকট্রিসিটি নেই। কিছুক্ষণ পর পর আকাশে বিজলী চমকাচ্ছে। মেয়েটা হয়তোবা অশরীরের ভয়ে আমার দিকে কিছুটা ঘেসে এলো। সে তার ফোনে আমাকে কিছু লিখে দেখানোর চেষ্টা করছিলো। আমি বুঝতে সময় নিলাম উনি লিখেছে ড্রাইভারে পিছোনে কি যানো গোঁজা। আমি বিজলির আলোতে লক্ষ করলাম পিস্তল জাতীয় কিছু। মেয়েটা আবার লিখলো মিস্টার আমি আপনার থেকে বড় বিপদে আরো আগে থেকে আছি।
মাথাটা ঘুরিয়ে উঠলো। সাধারণ একটা দিন কিভাবে জানো ভয়ংকর একটা রাত হয়ে উঠছে। আমার মতো মিডেল ক্লাসের সাধারণ গল্প টা রুপ নিচ্ছে জটিল এক গল্পে। জীবনে আসলে কখনো কখনো সিনেমার থেকেও সিনেমাটিক।
-তা ভাই আপনাকে অনেক কষ্ট দিচ্ছি। নামই তো জানা হলো না
- আমার নাম বশির। আর ভাই কি যে কন। মানুষের জন্য মানুষ।
-ধন্যবাদ আপনাকে। একটু পানি খেতে পারলে ভালো হতো।
-আচ্ছা ভাই সামনে একটা দোকান থাকার কথা ঐখান থেকে খাইয়া নিয়েন।
ফোনে টাইপ করে মেয়েটাকে লিখে দেখালাম ভয় নেই। আমি বাদল আছি আপনার সাথে। মেয়েটাও লিখলো আপনাকে ভরশা করতে ইচ্ছে হচ্ছে। আমি শ্রাবণী। ধন্যবাদ।
ছোট খাটো একটা মাটির দোকান। বৃদ্ধ বয়সি লোকটি দোকান বন্ধ করতে যাচ্ছিলো। আমাদের দেখে বললো কি লাগবে। কেক পানি খেয়ে বশির কে বললাম সিগারেট খাবেন?উনি মাথা নাড়লো। বৃষ্টি থেমে গেছে বাতাসে গা জুড়িয়ে যাচ্ছে। সিগারেট টানতে টানতে সময় টা দেখে নিলাম রাত ১০ টা ২৩।
সিগারেট শেষ করেই ড্রাইভার কে জড়িয়ে ধরে বললাম ভাই অসংখ্য ধন্যবাদ। এই বলে আমার হাত চলে গেলো ড্রাইভারের কোমড় বরাবর। ড্রাইভার হেসে উঠলো আমার মাথা বরাবর গুলি ধরে বলল হারামজাদা তুই কি ভাবসোস আমি ভুদাই। অনেক পাকনামি করছোস।
তুই গাড়িতে উঠছোস নিজের ইচ্ছায় আমি উঠাই নাই। তবে একটা লাভ হইছে তোর জন্য এই নিরিবিলি রোডে ঢুকতে পারছি। মালডারে ফাউকাল পৌছে দিতে পারলেই আমি মুক্ত। দে মোবাইল টা দে। (মোবাইল নিয়ে নিলো) চাচা মিয়া চুপ চাপ বয়া থাকেন। নাইলে ঠুস। আর আফা।
আপা বলেই থেমে গেলো বশির।বলল
-সর্বনাশ মাল উইড়া গেলো। হেডার পোলা তোর লাইগা এত কিছু। মর তুই।
- ভাই ঠান্ডা হোন। আপনি যা খুশি করেন এরে নিয়া, আমার কিছু আসে যায়না। বরঞ্চ মেয়েটা বেশি দূর যেতে পারেনাই। আসেন দুই ভাই খুজি পেয়ে যাবো ওরে।
- সত্যি কইতাছোস তো?
- হ ভাই। মেয়েটাকে খুঁজে দি আমার ফোনটা দিয়ে দেন অনেক দামি।
- আচ্ছা দিমু আগে খোঁজ।
বশির পিস্তল নামাতেই একটা ধাক্কা মারলাম। পিস্তল তুলে নিয়ে মারলাম একটা লাথি।
রাত এগারোটা ত্রিশ। বশির কে বেধে রেখেছি চাচার বাসায়। চাচা একা মানুষ দোকান বাড়ি সব এখানেই। আসে পাশে বাড়ি ঘর খুব একটা নেই। শ্রাবণী কাঁদছে। বললো বাদল সাহেব জানিনা কপালে কি আছে। মরা ছাড়া আমার গতি নেই।
এই প্রথম মেয়েটার ফেস ভালো মতো দেখলাম। কি সুন্দর মায়াবী চেহারা। টেনশনে পরে কিভাবে চেয়ে আছে আবার টপ টপ করে পানি পড়ছে চোখ থেকে তারপরেও মন্দ লাগছে না।
শ্রাবণী বলল আমি ইডেনের ছাত্রী। ট্রিরাস্তা আমার চাচার বাসা। যেয়ে এসেই রোজ ক্লাস করি। এলাকার এক প্রভাবশালী ব্যক্তি জমির শেখের পুত্র জনি আমাকে রোজ বাজে ইঙ্গিত করে। গত সোমবার আমার পথ আটকিয়ে হাত ধরে টান দেয়। আমি বাধ্য হয়েই থাপ্পড় মেরে বসি। সেদিন ও আর কিছু বলেনি। রাতে এসে চাচাকে বলে যায় শুক্রুবারের মধ্যে আমার সাথে ওর বিয়ে না দিলে শুক্রুবার রাতে তুলে নিয়ে যাবে। চাচা ওর বাবাকে বিষয়টা জানালো উনি চাচার কথায় পাত্তা দেন না। থানায় ও কোন কেস নেয় না ওদের বিরুদ্ধে। চাচী ও এসব বিষয় নিয়ে চাচার সাথে খুব রাগারাগি করে। চাচা আমাকে গোপনে টিকেট কেটে দিয়ে বলে মা তুই বাড়ি চলে যা। ওরা শুক্রবারের পর কি করবে আমি বুঝতে পারছিনা। চাচার কথায় আজ সন্ধায় আমি জয়দেবপুর স্টেশনে যাই। গিয়ে দেখি সেখানে ওর বন্ধু বান্ধব বসে আছে। ওদের চোখের আড়াল হতে এই অটো রিজার্ভ করে শিমুলতলীর দিকে যাচ্ছিলাম। ওখানে আমার বান্ধবী দিপ্তিদের বাসা। এর পর কি থেকে কি হয়ে গেলো বুঝতে পারছিনা
কথা গুলো শুনে কি করবো মাথায় আসছে না। যেভাবে হোক একটা সমাধান করতেই হবে। সত্যি বললে মানুষ সমাধান করার কেউ না। পা বাড়ালে সৃষ্টিকর্তাই সমাধানের পথ বের করে দেন।
উঠে দাড়ালাম। উঠেই বশিরের নাক বরাবর সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে দুটা ঘুষি মারলাম। বশির ব্যাথায় শব্দ করে উঠলো।
বললো ভাইজান মাইরেন না আমারে আমি হুকুমের দাস। ভায়ের কথা মতো কাজ না করলে গুয়ার চামরা থাকবো না।
ভাই যখন খবর পায় পাখি উড়ে গেছে। আমাদের কাছে আপার ছবি পাঠিয়ে দেয়। আমার কাছে ছবি পৌছা মাত্রই দেখি আপা আমার সামনে। ইচ্ছা করলে তখনই ভায়ের লোক গো কাছে ওনার দিয়ে দিতে পারতাম কিন্তু এক্সট্রা টাকার লোভে সিংগেলে ভাইয়ের কাছে পৌছাইয়া দেওয়ার চিন্তা আসলো মাথায় এর পর তো সব জানেন ই।
আমি বললাম শ্রাবণী আমার বাসা পাওজুলিয়ার দিকে। কাল ভোরে তোমাকে বাড়িতে রেখে আসবো। আরো কিছু বলার আগে শ্রাবণী আমার মুখ চেপে ধরলো। হাত টেনে ধরে রুম থেকে বের করে বললো ওর সামনে এইসব না বললেই কি নয়।
আমি বললাম আরে পাগলী আমি মিথ্যে বলেছি। আমরা একটু পরেই বের হবো। আর চাচাকে বলবো ওকে সময় মতো ছেড়ে দিতে। শ্রাবনী বললো কিভাবে যাবো এতো রাতে। আমি বললাম কেনো অটো আছে না।।
রাত ১ টা ৫ শ্রাবণী পেছোনে একা বসতে ভয় পাচ্ছিলো। আমি ওকে পাশে বসিয়েই অটো স্টার্ট করলাম।।এই প্রথম কোন একটা মেয়ে আমার এতোটা কাছে। মেয়েটা ক্লান্ত। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পরছে। আমার হৃদয়ে এখন একটা প্রেমের গল্প বাসা বেধেছে। বশিরের ফোনে অনেক গুলো এসএমএস দেখেছি। সারসংক্ষেপ যা বুঝলাম লোকটি ফাউকালে ওর এক বন্ধুর ফার্ম হাউজে আছে। সেখানে মেয়েটাকে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। দেরি হচ্ছে দেখে সে বিরক্ত। সে জানে মাঝির খোলা দিয়ে অটো ঢুকেছে। তার মানে ফোন বন্ধ পেয়ে যখন তখন সে চলে আসবে খুঁজতে খুঁজতে। আমি আবার বশির কে দিয়ে ফোন করিয়ে বলেছি আটো তে প্রবলেম হয়েছে একটু লেট হবে আসতে। তাছাড়া রাস্তা ভালোনা।
মেইন রোডের কাছাকাছি আসতেই একটা ভয় কাজ করলো। হাইওয়ে পুলিশ কি না ঝামেলা করে বসে। কপাল টা ভালো ছিলো রাস্তায় এখনো মানুষ জন আছে। মনে পড়লো আজ ডুয়েট ডে। ডুয়েটে কনসার্ট চলছে। কনসার্টে এসে দেশ বিখ্যাত ব্যান্ড Rain Man. অটোটা MIST er কাছাকাছি রেখে শ্রাবনীকে নিয়ে ডুয়েটে ঢুকলাম। বন্ধু আজিজ কে ফোন দিয়ে আসতে বললাম ওকে বিষয় টা খুলে বললাম। ও বললো অনেক বড় প্রবলেমে পরে গেছিস কি করবি বল। আমি বললাম কি করবো এখনো ভাবি নি। তুই বরঞ্চ এক কাজ করে লেডিস হোস্টেলে ওকে নিয়ে যেয়ে ওকে একটা বোরখা ম্যানেজ করে দে। এর পর তোর বাইক দিয়ে ওকে আমার বাসায় পৌছে দে। আর ওর ড্রেস আমার কাছে দে।
বন্ধু রাজুর রুমে বসে আছি। বন্ধুকে সব খুলে বললাম।
সকাল দশটা বাজে আজ শুক্রুবার। শ্রাবনী আমার বাসায়। আমি রাজু আর রাজুর বৌকে নিয়ে স্টেশনে বসে আছি। মাক্স পরা পরনে শ্রাবনীর ড্রেস। ট্রেন আসতেই ওকে ট্রেনে উঠাতে যাবো এমন সময় জনি বাহিনীর আগমন সাথে অটোচালক বশির ও আছে। সাথে ১০-১২ জন লোক। বললো ঐ খাড়া। সারা রাত অনেক দৌড় ঝাপ করাইছোস এবার তোর খবর আছে। এই বলে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো গালে। রাজুকে একটি থাপ্পড় মারলো। শ্রাবনী ভেবে ওর হাত ধরে টান দিয়ে মাক্স খুলে দেখে অন্য কেউ। জনি চমকে গেলো। ওদিক থেকে কালকের কিশোর ছেলে গুলো আমার খবর পেয়ে বিশ জন নিয়ে জড়ো হয়েছে। দৌড়ে এদিকে এগিয়ে আসছে। আমি একটূ দৌড়ে দুদলের মাঝামাঝি গেলাম। সিনামা স্টাইলে বললাম আজ একা আসিনি তোদের খবর আছে। দুই দল দু দলের মধ্যে লেগে গেলো। আমি সুযোগ পেয়ে জনির সাথে লেগে গেলাম। আগে থেকেই স্থানিয় ভোলেনটিয়ার ভাইদের সাথে পুরো ঘটনা শেয়ার করা ছিলো। ওরা মাইকিং করে জনির কুকর্মের বর্ণনা দিতে লাগলো। পাবলিক দের অনেকেই বলে উঠলো আমারও ভুক্তভোগী ওর একটা শান্তি হওয়া দরকার।
জনগনের গণপিটুনি খুব একটা ওদের খেতে হলো না। এর আগেই পুলিশ এসে গেছে। রাজুর স্ত্রী এসপি শায়লার আগে হাত তোলার অপরাধে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত রাতেই রাজু শায়লা ভাবি আর আজিজ কে নিয়ে প্ল্যান করে রাখা। আজিজ এর সাথে ব্যান্ডের ভোকাল রিউদি ভায়ের সুসম্পর্ক। কাকতালীয় ভাবে তার চাচা আবার বাংলাদেশ সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী।
সারাদিনে অনেক কিছু ঘটে গেছে। মন্ত্রী সাহেবের কথায় জমির শেখের বাড়ি তল্লাসি করে মাদক এবং অস্ত্র সহ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জনি বাহিনীও জেলে। গণমাধ্যমেও বিষয় টা নিয়ে একটা তোলপাড় হয়ে গেছে। সারাদিন অনেক বাহবা পেয়েছি।
শ্রাবনী আর আমি ছাদে বসে আছি। শ্রাবনী বললো ধন্যবাদ আপনাকে, এতো দ্রুত কিভাবে কি করে ফেলেছেন আমার বিশ্বাস ই হচ্ছে না। আমি বললাম শ্রাবনী সত্যের পথে থাকলে সৃষ্টিকর্তা এভাবেই সাহায্য করে। ঘটনায় যেভাবে প্যাচ লেগে যাচ্ছিলো তার তুলনায় অনেক সহজ ভাবে রেহাই পেয়ে গেছি।
শ্রাবনী বলল আপনার মা তো ভেবে নিয়েছে আমি আপনার জিএফ। আমি মুচকি হাসলাম বললাম তাইতো দেখছি। ফেসবুকে ও দেখলাম অনেকে মজা করে লিখছে শ্রাবনী আর বাদলের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হোক। শ্রাবণী লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। ওর মাথা নিচু হয়ে গেলো। আমি বললাম এই মেয়ে তোমার কি কেউ আছে নাকি? ও মাথা নেড়ে বললো না। আমি বললাম তোমার মতো সুন্দরী একজন আমার বউ হলে মন্দ হয় না। আর একটা বিষয় খেয়াল করেছো দুজনের নামের প্রতিশব্দই হলো বৃষ্টি।
শ্রাবণী এত ভাবার টাইম আমার নেই। Will You marry me?
শ্রাবনী লজ্জায় আরো লাল হয়ে গেলো। কিছু বললো না। হুট করে শ্রাবন ঝড়তে লাগলো। মুশলধারায় বৃষ্টি। দুজন ভিজতে লাগলাম। বৃষ্টি বাদলের দিনে আমি আর শ্রাবণী ভিজছি।।।।।।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
বিশ্বরঞ্জন দত্তগুপ্ত
গল্পটি ভাল করে পড়লাম। এক কথায় বলছি - আমি একেবারে মুগ্ধ। বিষয় বস্তু, উপস্থাপনা খুব সুন্দর। শুভকামনা জানিয়ে বলছি আগামি দিনে ভাল ভাল লেখা পাঠকদের এই ভাবে উপহার দিন।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
গল্পটি একটি সাধারণ ছেলের গল্প। গল্পটার সময় কাল সম্পুর্ণ বর্ষাকাল কেন্দ্রীক। এবং গল্পটায় বার বার বৃষ্টিকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বৃষ্টি বাদলের গল্প না বললেই ভুল হবে
১৯ এপ্রিল - ২০২৩
গল্প/কবিতা:
১৪ টি
সমন্বিত স্কোর
৫.২৪
বিচারক স্কোরঃ ২.৫৪ / ৭.০পাঠক স্কোরঃ ২.৭ / ৩.০
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।